কুমিল্লায় নিখোঁজের ৯ মাস পর শিশুর মাথার খুলি ও হাড় উদ্ধার

স্টাফ রিপোর্টার।।
কুমিল্লার লালমাইয়ে নিখোঁজের ৯ মাস পর হালিমাতুছ সাদিয়া নামের এক শিশুর মাথার খুলি ও হাড় উদ্ধার করা হয়েছে। সোমবার (১৪ এপ্রিল) দুপুরে লালমাই থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুল্লাহ আল ফারুক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

শিশুটির পরিবার জানায়, উপজেলার পেরুল উত্তর ইউনিয়নের মধ্যম ছিলোনিয়া গ্রামের দিঘির পানি শুকিয়ে যাওয়ায় কয়েক দিন ধরে বিভিন্ন খণ্ডিত অংশে মাছ ধরেন স্থানীয়রা। রোববার (১৩ এপ্রিল) বিকেলে দিঘির পূর্ব-দক্ষিণের একটি খাদে (গর্তে) মাছ ধরছিলেন ছিলোনিয়া গ্রামের কলিম উদ্দিন। মাছ ধরতে গিয়ে তিনি একটি বস্তু দেখতে পেয়ে শুকনো স্থানে ছুড়ে মারেন। পানি দিয়ে পরিষ্কার করার পর তিনি দেখেন এটি মাথার খুলি। তখন তিনি খাদে আবার খুঁজতে নামেন এবং চারটি হাড় খুঁজে পান।

খবর পেয়ে রোববার রাত ১০টায় লালমাই থানার ওসি মো. শাহ আলম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। ওই সময় নিখোঁজ শিশু হালিমাতুছ সাদিয়ার বাবা আকতার হোসেন এবং মা আয়েশা ছিদ্দিকার উপস্থিতিতে লালমাই থানার এসআই আবদুল্লাহ আল ফারুক মাথার খুলি ও হাড়গুলো উদ্ধার করেন।

নিখোঁজ শিশুর মা আয়েশা ছিদ্দিকা সাজু বলেন, গত বছরের ১৫ জুলাই বিকেলে আমার মেয়েকে বাড়ি থেকে অপহরণ করা হয়েছিল। তখন আন্দোলনের কারণে পুলিশি কার্যক্রম প্রায় স্থগিত ছিল। মেয়েকে উদ্ধারে তখন পুলিশের কোনো সাহায্য পাইনি। থানায় শুধু একটি সাধারণ ডায়েরি করেছি। পরবর্তীতে আমি কুমিল্লার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতে আমার প্রতিবেশী হারুনুর রশিদ ও নুরুন্নাহারের নাম উল্লেখ করে অপহরণের একটি মামলা করি। সেই মামলা তদন্তাধীন অবস্থায় পিবিআই, কুমিল্লার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালতে হাজির হলে ১৩ এপ্রিল বিচারক লালমাই উপজেলার ভুশ্চি গ্রামের ইমাম হোসেনের স্ত্রী খাদিজা জাহান রিয়াকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

তিনি আরও বলেন, আমার ভাশুরের পরিবার ও আমার বড় মেয়ের প্রাক্তন স্বামীর পরিবারের সঙ্গে আমাদের দ্বন্দ্ব ও মামলা চলমান। আমার শিশু মেয়ে কারও ক্ষতি করেনি। শুধু পারিবারিক দ্বন্দ্বের কারণে নিষ্পাপ শিশুটিকে তারা পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। অপহরণের কয়েক মাস পরেও গ্রেপ্তার হওয়া খাদিজা আক্তারের কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট এলাকার বাসায় আমার নিখোঁজ মেয়েকে ওই বাসার মালিক দেখেছিল। খাদিজা তখন আমাদের বলেছিল, আমার বড় মেয়ে ফাতেমাকে পূর্বের স্বামীর ঘরে ফিরিয়ে দিলে ছোট মেয়ে হালিমাকে ফিরে পাওয়া যাবে। আমার কাছে সব কথার অডিও রেকর্ড সংরক্ষিত আছে।

পেরুল উত্তর ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান এনায়েত উল্যাহ বলেন, শিশুটি নিখোঁজের খবর পেয়ে গত বছরের ১৫ জুলাই সন্ধ্যা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত লাকসামের ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা দিঘিসহ গ্রামের তিনটি পুকুরে সন্ধান করেন। তখন দিঘির পশ্চিম-দক্ষিণ পাড়ে শিশুটির পায়ের জুতা পাওয়া গিয়েছিল। দিঘিতে কচুরি পানা ভরপুর ছিল। আর এখন দিঘির পূর্ব-দক্ষিণ অংশের খাদে শিশুটির খুলি ও হাড় পাওয়া গিয়েছে। পুলিশ তদন্ত করে সত্যটা বের করুক। প্রকৃত অপরাধীর ফাঁসি চাই।

লালমাই থানার ওসি মো. শাহ আলম বলেন, শিশু হালিমা নিখোঁজের ৯ মাস পর তার বাড়ির পূর্ব পাশের দিঘি থেকে একটি মাথার খুলি ও চারটি হাড় উদ্ধার করা হয়েছে। খুলিটি তার কিনা বিষয়টি নিশ্চিত হতে শিশুর মা অথবা বাবার ডিএনএ টেস্টের জন্য স্যাম্পল পাঠানো প্রক্রিয়াধীন আছে। এ ছাড়া অপহরণের ঘটনায় যেহেতু আদালতে মামলা চলমান ও তদন্তাধীন সেহেতু আমরা নতুন করে এখনই কোনো মামলা নেব না।

     আরো দেখুন:

পুরাতন খবর

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০  

You cannot copy content of this page